Summary
মহুয়া পালাটি: দ্বিজ কানাই প্রণীত 'মহুয়া' পালাটি মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের গীতিকা (Ballad) ধারার একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনা।
দীনেশচন্দ্র সেন রায়বাহাদুর ১৯২৩ সালে 'মৈমনসিংহ-গীতিকা' থেকে পালাটিকে গদ্যে রূপান্তর করেছেন। মনে করা হয় এটি মহুয়ার প্রেমশক্তি ও আত্মপ্রত্যয়ের করুণ কাহিনি, যা মানবসৃষ্ট দুর্যোগের মধ্য দিয়ে ধ্বংস হয়ে যায়।
পুরাণের কাহিনি: পালাটির কাহিনি খুঁজে পাওয়া যায় একজন কন্যা অনিন্দ্যকান্তি মহুয়া এবং জমিদারপুত্র নদের চাঁদের প্রেমে, যা সমাজের বৈষম্যকে অতিক্রম করতে চায়। কিন্তু বেদে সর্দার হুমরার কারণে এই প্রেম বাধা পায়। শেষ পর্যন্ত প্রেমিক-প্রেমিকা একত্রিত হতে ব্যর্থ হয় এবং মৃত্যুই তাদের অবশ্যম্ভাবী পরিণতি।
পালাটির রচনায় কিছু অসঙ্গতি ও অতিশয়োক্তি আছে, কিন্তু এটি ময়মনসিংহ অঞ্চলের সমাজ বাস্তবতার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে এবং দুর্জয় প্রেমের এক অদ্ভুত নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত হয়।
দ্বিজ কানাই প্রণীত “মহুয়া” পালাটি মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের গীতিকা (Ballad) ধারায় একটি উল্লেখযোগ্য সম্পদ। দীনেশচন্দ্র সেন রায়বাহাদুর সংকলিত এবং ১৯২৩ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত ‘মৈমনসিংহ-গীতিকা’র প্রথম খণ্ড থেকে এ পালাটি গদ্যে রূপান্তর করে গৃহীত হয়েছে। পালাটিতে মহুয়ার দুর্জয় প্রেমশক্তি ও বলিষ্ঠ আত্মপ্রত্যয় কীভাবে মানবসৃষ্ট দুর্যোগে ধ্বংস হয়ে গেল তারই মর্মন্তুদ কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। গীতিকাটির কাহিনি গড়ে উঠেছে বর্ণ ও শ্রেণিবৈষম্যমুক্ত একটি মানবিক প্রণয়কে কেন্দ্র করে। একদিকে ছয় মাস বয়সী চুরি হওয়া কন্যা অনিন্দ্যকান্তি মহুয়া অন্যদিকে জমিদারপুত্র নদের চাঁদ। তাদের অদম্য প্রেম সকল বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে চেয়েছে। কিন্তু বেদে সর্দার হুমরা সামাজিক, বৈষয়িক ও মনস্তাত্ত্বিক কারণে এ প্রেমের প্রবল প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে নানা প্রতিকূলতা ডিঙিয়েও মিলনপিয়াসী দুটি মানব হৃদয় শেষ পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছুতে ব্যর্থ হয়। মৃত্যুই হয় তাদের অবশ্যম্ভাবী পরিণতি । পালাটিতে কাহিনি বর্ণনায় সংহত রচনারীতির ঘাটতি ও নানা অতিশয়োক্তি রয়েছে। ময়মনসিংহ অঞ্চলের উপভাষায় রচিত ও নাটকীয় গুণসম্পন্ন এ পালাটিতে বর্ণনারীতির প্রাধান্য রয়েছে। এ অঞ্চলের তৎকালীন সমাজ-বাস্তবতা সমৃদ্ধ পালাটি দুর্জয় প্রেমের অপূর্ব নিদর্শন।
Read more